|| সারাবেলা প্রতিনিধি, রাণীশংকৈল (নওগাঁ) ||
আপনি টাকা দেন, চা খরচের জন্য লাগবে, তাহলে আগামীকালই আপনাকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেওয়া হবে। এমন কথায় তড়িঘড়ি করে ছাগল বিক্রির দুই হাজার টাকা আর সুদ করে তিন হাজার টাকা, সবমিলিয়ে পাঁচ হাজার স্থানীয় ভুমি অফিসের এক কর্মচারীকে দিয়েছিলেন পৌর শহরের ভান্ডারা গ্রামের তকদির আলী ওরফে লেদু’র স্ত্রী ফাতেমা)।তাও প্রায় এক বছর আগের কথা।
টাকা নিয়েও ঘর না দেওয়ার অভিযোগটি উঠেছে ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলা ভুমি অফিসের অফিস সহায়ক রবি চন্দ্রের বিরুদ্ধে। গত রোববার ফাতেমার এক আত্নীয় উপজেলা পরিষদের সামনের মার্কেটে রবি চন্দ্রের কাছে ঘর দাবি করলে রবি বলেন, উপজেলা ভুমি অফিসের নাজিরের কাছে যা, চার হাজার টাকা দেবে। এ কথায় ফাতেমার ঐ আত্নীয় বলে তুমি টাকা নিলা ৫ হাজার আর টাকা এক বছর পর ফেরত দিবা ৪ হাজার। এ নিয়ে তর্ক হচ্ছিল দুই জনের মধ্যে। সেখানে উপস্থিত এইপ্রতিবেদক বিষয়টি জানতে চাইলে সটকে পড়েন ভুমি অফিসের রবি।
পরে ফাতেমার আত্মীয়র কাছে ফাতেমার নম্বর নিয়ে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, ছাগল বিক্রি করে ও সুদের উপর টাকা নিয়ে রবিকে টাকা দিয়েছিলাম। টাকা দিলেই সে আমাকে নেকমরদ এলাকার কুমরগঞ্জ গ্রামের একটি খাস জায়গায় আমাকে ঘরসহ বাড়ি বুঝিয়ে দিবে। টাকাটা ভালোই ভালো নিয়ে পরে আজকাল করে বিগত এক বছর সে আমাকে হয়রানি করেছে।
ফাতেমা আরো জানান, এখন শুনছি সে আমাকে টাকা ফেরত দিবে যা দিয়েছি তার থেকে এক হাজার কম। ফাতেমা আক্ষেপ করে বলেন, পৌরশহরের একটি বেসরকারী ক্লিনিকে দুই হাজার টাকা বেতনের আয়ার চাকরি করে জীবিকা নির্বাহ করছি। নিজস্ব কোন জায়গা জমিও নেই। যদি সরকারীভাবে এ ঘরটি পেতাম তাহলে উপকৃত হতাম। এখন ভুমি অফিসের রবি আমাকে ঘর না দিয়ে টাকা ফেরত দিচ্ছে।
এদিকে ফাতেমার ঐ আত্নীয় আব্দুল করিম জানান, গত রোববার রাতে উপজেলা ভুমি অফিসের নাজির শাকিব আমাকে ডেকে ৪ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন। এর সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা ভুমি অফিসের নাজির শাকিব মুঠোফোনে জানান, এসিল্যান্ডের নির্দেশে আমি টাকা দিয়েছি। তবে টাকাটা কিসের টাকা সেটা আমি জানিনা।
উপজেলা ভুমি অফিসের অফিস সহায়ক রবি চন্দ্রের বক্তব্য নিতে তার মুঠোফোনে সোমবার ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভুমি) প্রীতম সাহা সোমবার মুঠোফোনে জানান, বিষয়টি আমাকে উপজেলা কৃষি অফিসের ড্রাইভার জানালে আমি তাকে বলেছিলাম এই রকম হলে, ঐ ভুক্তভোগী টাকা ফেরত পাবে, সে মোতাবেক টাকা রবি’র বেতন থেকে কেটে মহিলাকে দেওয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রবি’র বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মহিলাটি ঘর পাবে কিনা প্রশ্নে বলেন, যদি তিনি সত্যিকারের ভুমিহীন হন অবশ্যই ঘর পাবেন।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির সোমবার মুঠোফোনে জানান, বিষয়টি আমি গুরত্ব সহকারে দেখছি।