চুনারুঘাটে রাস্তা ও জমি দখলের অভিযোগ পত্রিকা সম্পাদকের স্ত্রীর বিরুদ্ধে

রাস্তা দখল করে দেয়াল তৈরির অভিযোগ উঠেছে দৈনিক বিজয়ের প্রতিধ্বনির সম্পাদক আনিসুজ্জামান রতনের স্ত্রী তাজুন্নাহার রত্না ও তার বোন কামরুন্নাহার রেখার বিরুদ্ধে। আর চুনারুঘাট আহম্মাদাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সনজু চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি সরকারি এই রাস্তা ও কবরস্থানের জায়গা সংরক্ষণ না করে উল্টো এতে দেয়াল তৈরির অনুমতি দিয়েছেন।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ ||

দখল করে নির্মাণকাজ করা হচ্ছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েটের প্রতিষ্ঠাতা ভিসি ড. এম এ রশিদের কবরস্থান ও প্রায় ৩ হাজার মানুষের চলাচলের প্রাচীন একটি সড়কে। চুনারুঘাট উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের বগাডুবি, রানীর কোট ও কিরতাই বরাবর এই রাস্তা দখল করে দেয়াল তৈরির অভিযোগ উঠেছে দৈনিক বিজয়ের প্রতিধ্বনির সম্পাদক আনিসুজ্জামান রতনের স্ত্রী তাজুন্নাহার রত্না ও তার বোন কামরুন্নাহার রেখার বিরুদ্ধে। আর চুনারুঘাট আহম্মাদাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সনজু চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি সরকারি এই রাস্তা ও কবরস্থানের জায়গা সংরক্ষণ না করে উল্টো এতে দেয়াল তৈরির অনুমতি দিয়েছেন।  এই দেয়াল তৈরির কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও করেন আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সনজু চৌধুরী। জনপ্রতিনিধির এমন মানুষবিরুদ্ধ কাজে এলাকায় বইছে সমালোচনার ঝড়।

ছবি: সংবাদ সারাবেলা

জানা যায়, বুয়েটের প্রতিষ্ঠাতা ভিসি ড. এম এ রশিদের কবরস্থান এবং গ্রামের রাস্তা দখল করে দৈনিক বিজয়ের প্রতিধ্বনির সম্পাদক মো. আনিসুজ্জামান রতনের প্রভাব কাটিয়ে দেয়াল তৈরি করছে তার স্ত্রী কামরুন্নাহার রেখা। রাস্তা দখলের অভিযোগ নিয়ে এলাকাবাসী আহম্মাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সনজুর কাছে গেলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। পরে বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।

ছবি: সংবাদ সারাবেলা

এরই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার জুম্মার নামাজশেষে গ্রামের মানুষ প্রতিবাদ জানায়। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান সনজু গ্রামের লোকজনকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ  করেন।
এদিকে তাজুন্নাহার রত্নার দাবি তিনি কোন অন্যায় কাজ করেননি। তিনি বলেন, “আমার এই দেয়ালের ঢালাই কাজের উদ্বোধন করেছেন খোদ চেয়ারম্যান সনজু চৌধুরী। উদ্বোধনের দিন চুনারুঘাট থানার ওসি আলী আশরাফও উপস্থিত ছিলেন।”

ছবি: সংবাদ সারাবেলা

এ বিষয়ে আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সনজু চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “আমি এই কাজের উদ্বোধন করিনি। সরকারি রাস্তা কাটার অনুমতি দেওয়ার এখতিয়ার আমার নেই। নির্বাচনকে সমানে রেখে একটি কুচক্রীমহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এগুলো তারই নমুনা।”
বিষয়টি জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সত্যজিৎ রায় দাশের কাছে গেলে তিনি জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় নিয়ে উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আবদুস সালামকে ঐদিন বিকেলে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

ছবি: সংবাদ সারাবেলা

আবদুস সালাম রাস্তাটি সরজমিনের দেখে প্রাথমিকভাবে মুঠোফোনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে রিপোর্ট দেন। যার ভিডিও একটি ফুটেজ রয়েছে সংবাদ সারাবেলা‘র  কাছে। এ সময় সালাম বলেন, “তাজুন্নাহার রত্না রাস্তা কেটে ৩ ফুট ভেতরে দেয়াল তৈরি করছেন। আমি ওনাকে বলেছি রাস্তার কাজ বন্ধ রাখতে।”

চুনারুঘাট থানার ওসি আলী আশরাফ জানান, সেইদিন স্থানীয় চেয়ারম্যান (আবেদ হাসনাত সনজু চৌধুরী) আমাকে একটি মিলাদে নিয়ে যান। আমি কোনো কাজের উদ্বোধন করিনি। গ্রামবাসীকে পুলিশি হয়রানীর বিষয়ে বলেন, স্থানীয় একটি পত্রিকা’র সম্পাদক আনিসুজ্জামান রতন অভিযোক করেছেন , তার স্ত্রীর নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে হুমকি দেয়া হচ্ছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে সেখানে পুলিশ যায়।

ছবি: সংবাদ সারাবেলা

এ বিষয়ে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সত্যজিৎ রায় দাশের সাথে কথা বললে তিনি “সংবাদ সারাবেলা” কে জানান, “অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথেই আমার সার্ভেয়ার সেখানে গিয়ে বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করেছেন এবং দুই এক দিনের মধ্যে গ্রামবাসীর সামনে জমিএবং রাস্তার সীমানা নির্ধারণ করে দেয়া হবে।”

 

সংবাদ সারাদিন