|| সারাবেলা প্রতিনিধি, গাজীপুর ||
নির্মিত সেতু সাধারনের চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার আগেই দেবে গেছে দু’পাশের সংযোগ সড়ক ভেঙে। কাপাসিয়া উপজেলার ঘাগটিয়া ইউনিয়নের খিরাটি তাঁতেরকান্দা ও সনমানিয়া ইউনিয়নের চরণীলক্ষীর মাঝে ঘোরশ্বাব নদীতে নির্মিত সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষের দশ দিনের মাথায় ভেঙে যায় দুই পাশের সংযোগ সড়ক।
নদীর পূর্ব পাশে তাঁতেরকান্দায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) তিন কোটি ষাট লাখ টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ করে। দুই বছরের বেশী সময় আগে শুরু হয় সেতুর নির্মাণ কাজ। গত রোজায় কাজ শেষ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ঈদের পর বৃষ্টিতে সংযোগ সড়ক ভেঙে গেলে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে সেতুটি।
এলাকাবাসীরা অভিযোগ, কষ্ট ঘুচবে এবং যাতায়াতে সুবিধা হবে এমনটি আশা ছিল আমাদের। কিন্তু কাজের মান খারাপ হওয়ায় ঝুঁকি বেড়েছে। অল্প বৃষ্টিতে দু’পাশ দেবে গিয়ে প্রায় চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ছে সেতুটি। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রতিকার চেয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন এলাকার সচেতন মহল।
স্থানীয় বাসিন্দা শরিফ হোসেন জানান, ঈদের আগে কাজ শেষ করে রাজমিস্ত্রিসহ ঠিকাদারের লোকজন চলে গেছে। তবে ঈদের পর বৃষ্টিতে নষ্ট হওয়া অংশ সঠিকভাবে মেরামত করতে ঠিকাদারকে তাগিদ দিয়ে গেছেন ইঞ্জিনিয়াররা।
এসময় সাংবাদিক পরিচয় জেনে স্থানীয় কয়েকজন লোক জড়ো হন। তাঁরা অভিযোগ করে বলেন, আলগা বালির ওপর ইটা বিছিয়েছে, বৃষ্টির পানিতে সেতুর দুই পাশ ভেঙে গেছে। উভয় পাশে নীচের ইটার দেয়ালে ফাটল ধরেছে এবং ব্লক সরে গেছে। বর্ষা শুরু হলে দুই পাশে ইট বিছানো অংশ ভেঙে চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।
খিরাটি গ্রামের বাসিন্দা আলতাফ হোসেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সেতুর সংযোগ সড়কের ভেঙ্গে যাওয়া অংশের কয়েকটি ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘নির্মাণের ১০দিনের মাথায় ভেঙ্গে গেল ব্রিজের সংযোগ সড়ক। এই দুর্নীতির শেষ কোথায়? খিরাটি তাঁতেরকান্না ব্রিজ। কাপাসিয়া, গাজীপুর’। তিনি আরও লিখেছেন, ব্রিজের কাজ শেষ হওয়ার মাত্র ১০ দিনের মাথায় এই অবস্থা দেখার কেউ নাই! বলার কেউ নাই!। চরনীলক্ষী টু খিরাটি এই ব্রিজ দিয়ে চার থেকে পাঁচ হাজার লোকের যাতায়াত। অটো, সিএনজি, মোটরসাইকেল প্রতিদিনই প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি ব্রিজটি যেন দ্রুত সংস্কার করা হয়।
শনিবার ঘাগুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় কাউন্সিলর ফারুক আকন্দের সাথে কথা হয়। তিনি জানান, তাঁতেরকান্দায় একটি সরু সেতু ছিল। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. খলিলুর রহমানের প্রচেষ্টায় এখানে বড় এবং প্রশস্ত ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। তবে কাজ ভাল হয়নি, অল্প বৃষ্টিতেই দু’পাশের সংযোগ সড়ক ভেঙে গেছে।
সনমানিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ঈদের পরদিন এই ব্রিজের উদ্যোক্তা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. খলিলুর রহমান পরিদর্শনে এসে অসন্তোষ জানিয়ে গেছেন। আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, বৃষ্টি হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, বৃষ্টির পর তারই আশঙ্কা সত্যি হলো। তিনি দুই পাশে মজবুত প্রটেকশন ওয়াল তৈরীসহ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন।
ঠিকাদার আব্দুল হামিদ বলেন, ব্রিজের কাজ শেষ হয়নি, বৃষ্টিতে বালি সড়ে গেছে, থানা ইঞ্জিনিয়ার চিঠি দিয়েছে আমরা ঠিক করে দেবো। কাপাসিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. আব্দুর রহমান মুহিম জানান, গত ১৯শে মে সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে তাদের দৃষ্টিতে এ ব্রিজের সংযোগ সড়কে বেশ কিছু ত্রুটি ধরা পড়ে। পরে তিনি ঠিকাদারকে এ বিষয়ে দ্রুত যথাযথভাবে কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়ে চিঠি দিয়েছেন।