|| সারাবেলা প্রতিনিধি, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) ||
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে নীতিমালা উপেক্ষা করে আবাসিক এলাকায় পোলট্রি খামার করায় বিষ্ঠার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে পরিবেশ। প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ও ইউপি চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয়রা।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় পাঁচ মাস আগে উপজেলার আঠারবাড়ী ইউনিয়নের মধুপুর (বালুয়াকান্দা) গ্রামের মো. শামিম (২৮) রায়বাজার সংলগ্ন বালুয়াকান্দা মাদ্রাসার পাশে আবাসিক এলাকায় প্রায় ৫০০ ফাউমি মুরগির খামার গড়েন। মুরগির বিষ্ঠার কারণে এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। বিষ্ঠার দুর্গন্ধে খামারের চারদিকে মানুষের বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে। অথচ নীতিমালা অনুযায়ী, একটি মুরগির খামার স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ও প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং জনগণের ক্ষতি হয় এমন স্থানে খামার স্থাপন করা যাবে না।
২৫শে জুলাই রোববার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খামারটিতে মুরগির বিষ্ঠা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। নেই পানি ও বিষ্ঠা নিষ্কাশনের ব্যবস্থা। খামারের পাশে রয়েছে বসতবাড়ি ও মাদ্রাসা।
প্রতিবেশী ডা. মো. আব্দুর রশিদ খান বলেন, ‘আমার ঘরের পাশেই খামার। বিষ্ঠা থেকে সব সময় দুর্গন্ধ ছড়ায়। আমার ঘরে শিশুসহ অসুস্থ বয়স্ক মানুষ রয়েছে। বর্তমানে আশপাশে বসবাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এছাড়া আবাসিক এলাকায় অবস্থিত খামারের বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থা নেই। খামারটি স্থাপনের ক্ষেত্রে জাতীয় পোল্ট্রি উন্নয়ন নীতিমালা-২০০৮ মানা হয়নি।’
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া প্রতিবেশি মো. মিজানুর রহমান বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে খামারটি সরানোর জন্য খামার মালিককে প্রায় চারমাস ধরে বললেও কোন প্রতিকার না পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলাম। পরে ২৪শে জুলাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। তার অনুলিপি পরিবেশ অধিদপ্তরেও পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খামার মালিক শামিম বলেন, শখের বসে ইউটিউব দেখে খামারটি করেছিলাম। খামারটি নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে যাতে দুর্গন্ধ কম ছড়ায়।
আঠারবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান জুবের আলম কবীর রুপক বলেন, অভিযোগ পেয়ে খামারী শামীমের সাথে যোগাযোগ করি। সে ঢাকায় চাকরি করে। ঢাকা থেকে এসে খামারটি স্থানান্তর করতে কয়েকদিন সময় চেয়েছিল। এখন সে বাড়ীতে আছে তার সাথে কথা বলে খামারটি দ্রুত স্থানান্তর করার ব্যবস্থা করব।
ইউএনও জাকির হোসেন বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে নিস্পত্তি করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দিয়েছি। তারপরও নিস্পত্তি না হলে আইনি পদক্ষেপ গ্রহন করব।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম বলেন, বিষয়টি তদন্ত করার জন্য ভেটেরিনারি সার্জনকে বলেছি। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।