|| বার্তা সারাবেলা ||
করোনাভাইরাস মহামারীর এই চরম দুর্দিনেও রাষ্ট্র ও সরকারগুলোর নেয়া পদক্ষেপগুলো বেশীরভাগই ধনীদের পক্ষে। প্রণোদনা থেকে শুরু করে সকল আর্থিক কর্মসূচির মধ্যে কিছু কিছু গরীবদের বাঁচিয়ে রাখতে নেয়া হলেও বেশীর ভাগই নেয়া হয়েছে ধনীদের জন্য। এতে করে ধনীরা হয়েছেন এবং হচ্ছেন আরো ধনী, বেড়েছে ও বাড়ছে তাদের আয় ও সম্পদ। মঙ্গলবার প্রকাশিত ফোর্বস ম্যাগাজিনের ৩৫তম বার্ষিক বিলিয়নেয়ারদের তালিকায় এবার যুক্ত হয়েছে নতুন আরো ৬৬০ জন ধনীর নাম।
ফোর্বস ম্যাগাজিনের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নতুন যুক্ত হওয়া ৬৬০জন বিলিয়নেয়ারের মধ্যে ৪৯৩ জনই এই প্রথমবারের মত বিশ্বসেরা ধনী মানুষের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন। অতি ধনীদের এই ‘এলিট ক্লাবে’র সদস্যদের মোট সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলার। তালিকার প্রায় ৮৬ শতাংশেরই মোট সম্পদের পরিমাণ গতবছরের চেয়ে বেড়েছে। অর্থাৎ, প্রতি আটজনের মাঝে সাতজনেরই মোট সম্পদ বেড়েছে এবং বাড়ছে।
বিশ্বজুড়ে বেশীর ভাগ মানুষের এমন দুর্দিনেও ধনীদের সম্পদ বেড়ে যাওয়া নিয়ে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার অর্থনীতিবিদ গ্যাব্রিয়েল জাকম্যান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম চারশজন ধনীর বর্তমান সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপির ১৮ শতাংশ, যা ২০১০ সালের চেয়ে দ্বিগুণ।
টানা চতুর্থবারের মত ফোর্বসের এই তালিকার শীর্ষে আছেন অ্যামাজনের প্রধান জেফ বেজোস। বেজোসের মোট সম্পদের পরিমাণ এখন ১৭৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ১৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মোট সম্পদ নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন টেসলার প্রধান ইলন মাস্ক।
ফোর্বস ম্যাগাজিনের ২ হাজার ৭৫৫ জনের এই তালিকায় এবারই প্রথম জায়গা করে নিয়েছেন মার্কিন রিয়্যালিটি শো তারকা কিম কারডাশিয়ান ওয়েস্ট।
এদিকে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, গত অক্টোবরে মহামারীর মাঝেই ওয়েস্টের মোট সম্পদের পরিমাণ ৭৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারে গিয়ে ঠেকে। লকডাউনের মাঝে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই তারকা তার ব্র্যান্ডের আরামদায়ক ঘরের কাপড়ের বিষয়ে প্রচার চালালে তাতে ব্যাপকভাবে বেড়ে যায় কোম্পানির বিক্রি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে তার অনুসারীর সংখ্যা প্রায় সাত কোটি, আর ইন্সটাগ্রামে এই সংখ্যা ২১ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি। কিম কারডাশিয়ানের স্বামী কানয়ে ওয়েস্টও এক দশমিক আট বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মোট সম্পদের মালিক হিসেবে জায়গা পেয়েছেন অতি ধনীদের এই তালিকায়। অবশ্য গত মে মাসে মোট সম্পদ বাড়িয়ে-চড়িয়ে উপস্থাপন করার অভিযোগে এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন কিমের সৎ বোন কাইলি জেনার।
এছাড়াও মাইক্রোসফ্ট এবং বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস ১২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নিয়ে অতি ধনীদের এই তালিকার চতুর্থ স্থানে রয়েছেন। ফেইসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ আছেন পঞ্চম স্থানে। এবং ভারতের মুকেশ আম্বানি দশম স্থানে রয়েছেন সাড়ে ৮৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মালিক হিসেবে।