জন্মনিবন্ধন জটিলতায় উপবৃত্তি বঞ্চিত কুমিল্লার দেড় হাজার শিক্ষার্থী

সার্ভার জটিলতায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে জন্ম নিবন্ধন সনদ জমা দিতে না পারায় উপবৃত্তির তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন এসব শিক্ষার্থী।

|| সারাবেলা প্রতিনিধি, কুমিল্লা ||

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন করতে না পারায় উপবৃত্তি পাচ্ছেনা উপজেলার ১শ’ ৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী।  সার্ভার জটিলতায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে জন্ম নিবন্ধন সনদ জমা দিতে না পারায় উপবৃত্তির তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন এসব শিক্ষার্থী।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ১০ই জানুয়ারি ছিল প্রাথমিকের উপবৃত্তি তালিকা জমা দেওয়ার শেষ দিন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় শেষেও শিশুদের জন্ম নিবন্ধন সম্পন্ন না হওয়ায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রথম দফায় ১৭ই জানুয়ারি, দ্বিতীয় দফায় ২৫শে জানুয়ারি ও ৩য় দফায় ৩১শে জানুয়ারি পর্যন্ত ৩ দফা সময় বাড়ায়।

কিন্তু এতেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। জন্মনিবন্ধন করতে না পারায় উপবৃত্তি বঞ্চিত হতে হচ্ছে উপজেলার ১ হাজার ৪৯০ শিশু শিক্ষার্থীকে। এতে উপবৃত্তি বঞ্চিত শিশু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

একাধিক অভিভাবক জানায়, উপবৃত্তির জন্য শিক্ষার্থীদের জন্ম নিবন্ধন বাধ্যতামুলক হওয়ায় পদে পদে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। শিশুর জন্ম নিবন্ধন করতে গিয়ে সার্ভার সমস্যার কারণে সময়মতো নিবন্ধন করা যাচ্ছে না।

উপজেলা সদরের দিশাবন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন জানান, ওই বিদ্যালয়ে ১১৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬৫জন উপবৃত্তির তালিকাভুক্ত হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদে সার্ভার জটিলতায় জন্ম নিবন্ধন করতে না পারায় বাকী ৫০জন শিক্ষার্থী উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এমন সমস্যায় পড়ছে উপজেলার বেশীর ভাগ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

উপজেলার লক্ষণপুর ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা অহিদুর রহমান প্রায় তিন মাস ধরে সার্ভার ধীরগতিতে কাজ করায় সেবা কার্যক্রমে কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে জানিয়ে বলেন, সার্ভার আইডি ওপেন করতেই এক থেকে দেড় ঘন্টা সময় লাগে। সারাদিনে মাত্র ১/২টা নিবন্ধনের কাজ করা যায়। দিনে সার্ভার না থাকায় গ্রাহক সেবা দিতে রাত জেগেও কাজ করার কথাও জানান তিনি।

মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল রানা জানান, নতুন সার্ভার চালু হওয়ায় সাময়িক অসুবিধা সৃষ্টি হয়েছে। সমস্যা সমাধানে বিষয়টি উর্ধবতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

শিক্ষা অধিদফতরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় মনিটরিং অফিসার শরীফুন নাহার জানান, শিক্ষার্থীরা যাতে উপবৃত্তি বঞ্চিত না হয় এ জন্য তিন দফা সময় বাড়ানো হয়েছে। শিক্ষা অধিদফতর কর্তৃক বাড়ানো সময়ের মধ্যেও যারা উপবৃত্তি বঞ্চিত হয়েছেন তাদেরকে পরবর্তীতে জন্ম নিবন্ধন প্রাপ্তি সাপেক্ষে তালিকাভূক্ত করে উপবৃত্তি দেয়া হবে।

সংবাদ সারাদিন